প্রকাশ :
২৪খবরবিডি: 'চলমান অর্থনৈতিক সংকট, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এখনই রাজপথে কঠোর আন্দোলনে যেতে ঘরেবাইরে চাপের মুখে বিএনপি। ভোলায় 'শান্তিপূর্ণ' কর্মসূচিতে পুলিশের গুলিতে দু'জন নেতা নিহতের ঘটনায় দলের ভেতর চাপ আরও জোরদার হয়েছে।'
-সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বর্তমানে দেশে একটা কর্তৃত্ববাদী সরকার রয়েছে। এখানে এখন ভয়ের সংস্কৃতি চালু হয়েছে। এ রকম প্রেক্ষাপটে প্রতিবাদ করাটা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিছু দিন আগে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে শাহবাগে বাম দলের মিছিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হামলা করেই ক্ষান্ত হয়নি, উল্টো পুলিশের লাঠিচার্জে আহতদের বিরুদ্ধেই মামলা হয়েছে। তাই ইচ্ছা করলেই প্রতিবাদ করাটা সহজ বিষয় নয়। সেটা সরকারবিরোধী সব রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রেই।
যৌথ সভায়ও রাজপথে নামতে চাপ :দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণে গত মঙ্গলবার রাতে দলের এক যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণসহ সব অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বেশ কয়েকজন নেতা সরকার নিজেদের ব্যর্থতার বোঝা জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে বৃহৎ দল হিসেবে বিএনপিকে কঠোর প্রতিবাদ জানানো উচিত বলে মত দেন।অবশ্য বৈঠকে সিনিয়র নেতারা হরতাল ও অবরোধের মতো জনভোগান্তি সৃষ্টি করে- এমন কোনো কর্মসূচিতে এই মুহূর্তে না যাওয়ার পক্ষে অবস্থান নেন। তাঁরা বলেন, সময় অনুযায়ী যুগোপযোগী আন্দোলন করতে হবে। সময় মতো হরতাল ও অবরোধ দিতে হবে। এ সময় তারেক রহমানও সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে একমত পোষণ করেন।
'এ সময় দলের হাইকমান্ড ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের লুটপাট, হত্যা, দখল, দেশবিরোধী কার্যক্রমসহ মানবতাবিরোধী কাজগুলোকে ডকুমেন্টারি আকারে তৈরির নির্দেশ দেন, যাতে আন্দোলন কিংবা নির্বাচনের সময় জনগণের সামনে তা উন্মোচন করা যায়। এ জন্য মিডিয়া সেলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী উপস্থিত ছিলেন।
-এদিকে লোডশেডিং ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ার প্রতিবাদে আরও তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। গতকাল বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। গত মঙ্গলবার দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এ কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
রাজপথে কঠোর আন্দোলনে যেতে ঘরেবাইরে চাপের মুখে বিএনপি
আগামী শনিবার বিদ্যুতের সার্বিক পরিস্থিতি, লুটপাট ও পরিকল্পনাহীন সিদ্ধান্তের বিষয় তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করবে দলটি। আগামী বুধবার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও মুদ্রাস্ম্ফীতির বিষয়ে এবং ১৯ আগস্ট জ্বালানি বিষয়ে সেমিনার আয়োজন করা হবে।
সমমনারাও চান রাজপথের কর্মসূচি :বিএনপির সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোও চাইছে দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিএনপির মতো বড় দল রাজপথের কর্মসূচি দিক। জনগণের জন্য তারা রাজনীতি করছে। তাদের দুর্দশায় যদি কঠোর আন্দোলনে না যেতে পারে, তাহলে জনগণের কাছেই জবাবদিহি করতে হতে পারে। নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে মানুষকে জাগিয়ে তুলতে হলে প্রত্যক্ষ কর্মসূচি দরকার। সেটা হরতাল হতে পারে, অবস্থান ধর্মঘট কিংবা অন্য কর্মসূচিও দেওয়া যেতে পারে। বিএনপি হয়তো তার কৌশল ও সক্ষমতা নিয়ে কর্মসূচি পালন করছে ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।